ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে ২ মাস পর লাশ উত্তোলন
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে মৃত হাবিবুর রহমান (৩৫) নামে একজনের ২মাস পর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুগাছি গ্রামের আইয়ুব আলীর পুত্র।আদালতের নির্দেশে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্র্যাট নাসরিন বেগম সেতুর উপস্থিতে পূর্বধলা থানা পুলিশ এ লাশ উত্তোলন করে।
মামলার বাদী মৃত হাবিবুর ছোট ভাই মো: স্বপন মিয়া জানান, আমার ভাইয়ের থুতুনীর নীচে একটি টিউমার দেখা দিলে ময়মনসিংহ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার অপারেশন করে টিউমার অপসারণ করার জন্য পরামর্শ দিলে পরে টাকা জোগাড় করে আপারেশন করব বলে বাড়ীতে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে গত ১৮মে এলাকার কাপাশিয়া গ্রামের মৃত ফজু মুন্সির পুত্র পল্লী চিকিৎসক নূরুল আমিন অপারেশন করার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে প্রথমে কাপাশিয়া বাজারের তার নিজস্ব চেম্বারে নিয়ে যান। পরবর্তীতে ময়মসিংহের চরপাড়া হাসপাতালের সামনে বিএন ক্লিনিক নামে তার এক আত্বীয়ের ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ সার্জন ছাড়াই তার অপারেশন করা হলে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে নূরুল আমিন সেখান থেকে পালিয়ে যান। তারপর লাশ এলাকায় নিয়ে এসে ময়নাতদন্ত করে লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিলে নুরুল আমিনের লোকজনের চাপে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়। এ নিয়ে পরবর্তীতে এলাকাবাসী বিষয়টি ক্ষতিপূরণ দিয়ে মীমাংসার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তাই সুবিচারের আশায় গত একমাস আগে নূরুল আমিনকে প্রধান আসামী করে আদালতে মামলা করেছি।
হাবিবুরের স্ত্রী ৩সন্তানের জননী নূরজাহান বেগম জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া নূরুল আমিন নিজেই অপারেশনের নামে ভুল চিকিৎস্যার মাধ্যমে আমার স্বামীকে মেরে ফেলেন। নূরুল আমিনের লোকজনের হুমকি ও স্থানীয় লোকজনের আশ্বাসে প্রথমে মামলা করা হয়নি। বর্তমানে আমি ছেলে মেয়েদের নিয়ে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে আজ রবিবার লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামী পলাতক রয়েছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্র্যাট নাসরীন বেগম সেতু জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল রিপোর্ট করে নেত্রকোনা পাঠানো হয়েছে।