পূর্বধলা সরকারি কলেজের জমি বিধি বহির্ভূত ইজারা’র অভিযোগ উঠেছে


পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকোনার পূর্বধলা সরকারি কলেজের জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে বিধি বহির্ভূত ভাবে ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইজারাদার ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট করতে গেলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। পরে প্রশাসন মাটি ভরাটসহ কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বধলা সরকারি কলেজের পাশে রাজধলা বিলের পাকা ঘাটের দুই পাশে কলেজের জমির দুইটি প্লট সম্প্রতি পাঁচ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। একটি প্লট ইজারা জারিয়া ইউনিয়নের দেওটুকোণ গ্রামের মো: হেলাল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে কামরুল হাসান আপেল। অপর প্লটটি ইজারা নেন উপজেলা সদরের রাজপাড়া গ্রামের আবুল হাশিম খান।
কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইজারার মূল্য বাবদ আবুল হাসিম খান ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও ওই প্রভাষক কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আনোয়ারুল হক রতনের সাথে যোগসাজসে তার ভাই কামরুল হাসান আপেলের নামে পরিশোধ করেন ৩০ হাজার টাকা।
গত শুক্রবার কামরুল হাসান আপেলের হয়ে তার ভাই আবু হানিফ তালুকদার এ্যাস্কেভেটর (ভ্যাকু) মেশিন দিয়ে রাজধলা বিলের সরকারি জমি থেকে মাটি কেটে ইজারা নেওয়া জমি ভরাট শুরু করেন।
গভীর গর্ত করে মাটি কাটায় পাকা ঘাটটি হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের নজরে আনেন। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু সরকারি জায়গা থেকে মাটি কাটা বন্ধ ও গর্তটি ভরাটের নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি ইজারা দিতে হলে প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে জমি ইজারা দিতে হয়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুমোদন ও কোনো দরপত্র আহবান ছাড়াই গোপনে ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়োরুল কাদির পাঠান পল্টন বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে কয়েকটি পুকুর গোপনে ইজারা দিয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতন জানান, জমি ইজারা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। তিনি অনুমোদন না দিলে ইজারাদারদের টাকা ফেরৎ দেওয়া হবে। কলেজ সরকারিকরণের কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। তাই জমি ইজারা দিতে মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই।
ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়ার আগেই কীভাবে ইজারাদার মাটি ভরাট শুরু করেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাটির ভরাটের বিষয়টি তার জানা নেই।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন বেগম সেতু বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ মাটি কেটে আনা জায়গাটি তাদের বলে দাবি করলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কাগজপত্র না দেখাতে পারায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে কুলসুম বলেন, কলেজের জমি ইজারা দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানে না।