পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকোনার পূর্বধলায় আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ছেলে বিপ্লব (১৯) কে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ এবং আজ বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরিপুর এলাকা হতে বিজয় কর্মকার (১৯), মোঃ তরিকুল ইসলাম (১৮) ও মোঃ আজহার মিয়া (৩৫) দেয় গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪।

গ্রেপ্তার- বিজয় কর্মকার ময়মনসিংহের গৌরিপুর উপজেলাধীন মইলাকান্দা গ্রামের শংকর কর্মকার’র ছেলে, মোঃ আজহার মিয়া একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে, তরিকুল ইসলাম পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জস্থ এমদাদুল হকের ছেলে ও বিপ্লব উপজেলার মানিকদি গ্রামের খুন হওয়া আব্দুল আজিজের ছেলে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আব্দুল আজিজ ওই ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের মৃত তালেব হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় শ্যামগঞ্জ বাজারে পোল্টি খাদ্যের ব্যবসা করতেন।

র‌্যাব জানায়, হত্যাকান্ডের দুদিন আগে গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় শ্যামগঞ্জ বাজারে একটি দোকানের পেছনে বসে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য হত্যাকারীদের নগদ ২০ হাজার এবং দুটি চাইনিজ কুড়াল কেনার জন্য আরও ১৫ হাজার টাকা দেন নিহত ব্যবসায়ীর ছেলে বিপ্লব।
এরপর ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রানা বিপ্লবকে পুলিশ ধরেছে জানিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনতে বাবা আব্দুল আজিজকে ফোন করেন। তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরিকল্পনা মতো ছেলে বিপ্লব এবং আজাহার পেছন দিক থেকে তার হাত ধরে এবং অন্যরা গলায় গামছা পেঁচিয়ে দুই দিক থেকে টেনে ধরে। পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় পাশের একটি পুকুরে হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল দুটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিপ্লব নিজেই তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যবসায়ীর ছেলে বিপ্লব মাদকাসক্ত। তাই বাবা তাকে তিরস্কার ও গালমন্দ করতেন বলেই তিনি বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করেন। আসামিদের পূর্বধলা থানায় সোপর্দ করা হবে বলেও জানান র‌্যাবের অধিনায়ক।

পূর্বধলা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ খুনের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী বকুল বেগম স্বামীকে খুনের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এঘটনায় ছেলে বিপ্লব কে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ এবং বাকী তিন জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব -১৪।