পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারনে নেত্রকোনার পূর্বধলায় ৩টি ইউনিয়নে ২২টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে অনেক এলাকার বাড়ী ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এসব এলাকার পানিবন্দী মানুষগুলো দুর্ভোগে পড়ছে। বন্যার পরিস্থিতি দেখতে বিভিন্ন প্লাবিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স, এসময় সাথে ছিলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম, জারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম নান্টু সহ অনেকেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন যাবত টানা বর্ষণ ও দুর্গাপুর এলাকা থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি ব্যপকভাবে নেমে আসায় পূর্বধলা উপজেলার সর্বত্র বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতে উপজেলার ধলামুলগাঁও ইউনিয়নের লাউয়াড়ী, দত্তকুনিয়া, পূর্ব শালথী, চোরের ভিটাসহ ১৩ টি গ্রাম, জারিয়া ইউনিয়নের জারিয়া, নলুয়া পাড়া, নাটেরকোনা, ঘুমকান্দা, গোজাখালীকান্দা, বাড়হা, মৌদাম নোয়াগাওসহ ১০ টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। এই ইউনিয়নের নাটেরকোনা আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এখানে বসবাসকারী ৯টি পরিবারকে উদ্ধারকরে নাটোরকোনা সরাকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের কালিপুর, বাইঞ্জা, মেঘশিমুল, গিরিয়াসাসহ ৯টি গ্রাম এবং আগিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। কংশ নদের পানি ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকির মাঝে পড়েছে বেড়িবাঁধ। মাছের খামার তলিয়ে যাওয়ায় মাছ বের হয়ে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারনে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। অপেক্ষাকৃত উচু এলাকার কাঁচা রাস্তাগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া সব্জি ফসলের ব্যপক ক্ষতি হচেছ। গবাদি পশুপাখি নিয়ে লোকজন বিপদে আছে।

ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজুয়ানুর রহমান রনি, ঘাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম রানা, জারিয়া ইউপি সচিব মোজাম্মেল হক শিকদার বন্যায় প্লাবিত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বন্যার পানি ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। ইতি মধ্যে বন্যা কবলিত বেশ কয়েকটি পরিবারের মাঝে ২০কেজি চাল, তেল, ডাল, লবণ, আটা ইত্যাদি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সকল ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পূর্বধলা ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের লোকজনদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলায় জরুরী কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করার জন্য ০১৭০৯-০৪৮২২৮ ও ০১৭১৩-৫৭৮৯৬০ নাম্বার দেওয়া হয়েছে।