পূর্বধলায় আবদুল হাননান খানের জন্মদিন পালিত
পূর্বধলা (প্রতিনিধি) নেত্রকোনা: সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা (আইজিপি পদ মর্যাদা), বাঙ্গালির ইতিহাস দায়মুক্তির অগ্রনায়ক, ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আলহাজ্ব আবদুল হাননান খানের জন্মদিন পালিত হয়েছে। আজ ১১ নভেম্বর, রোজ শুক্রবার মাগরিব বাদ সমাজকর্মী ও যুব সংগঠক রাশেদ খান সুজন’র পরামর্শক্রমে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার কলেজ রোডস্থ মহিয়ষী নারী কল্যাণ পাঠাগারে এই কীর্তিমানের জন্মদিনের কেক কাটা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগ নেতা আনিছ মিয়া, আল আমিন, নাজিম উদ্দিন খান, পূর্বধলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক ও সাংবাদিক আব্দুস ছাত্তার, পূর্বধলা প্রেসক্লাবের সদস্য ও প্রতিদিনের সংবাদ’র উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ আল মুনসুর, সাংবাদিক মুজিবুর রহমান তালুকদার, রাজপাড়া স্পোটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজভী মোহাম্মদ তুষার, যুগ্ন সম্পাদক কামরুল হাসান, প্রচার সম্পাদক সাজাদ হোসেন খান, আলিফ হাসান তারেক সহ অন্যান্যরা। এসময় সকলেই মরহুম আলহাজ্ব আবদুল হাননান খানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
কীর্তিমান মরহুম আলহাজ্ব আবদুল হাননান খান সম্পর্কে আরো কিছু জানুন, আবদুল হাননান খান ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার প্রধান তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা এবং জেল হত্যা মামলা ও ১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
আবদুল হাননান খান নেত্রকোণার পূর্বধলা খলিশাউর খানপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপূর্বে তিনি কিশোরগঞ্জ মহকুমার ছাত্র সংগ্রাম কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
কর্মজীবন
আবদুল হাননান ১৯৬৫ সালে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করে বিভিন্ন সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, নাসিরাবাদ কলেজ ও সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ১১ নাম্বার সেক্টরের অধীনে ঢালু সাব সেক্টরে যুদ্ধে অংশ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।
পুলিশে কর্মরত থাকাবস্থায় ১৯৯৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি জেল হত্যা মামলা ও ১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। আবদুল হাননান ২০০০ সালে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি তাকে বাংলাদেশ সরকার তাকে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে।
মৃত্যু
আবদুল হাননান ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরপূর্বে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের জন্য ২৬ নভেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।