নেত্রকোণায় সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে বিকাশে প্রতারণার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক : দিনটি শুক্রবার,এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ, সেই সাথে রমজানের রোজা রাখছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম নর-নারীরা। সময়টা ছিল বিকাল ৩ ঘটিকা, হঠাৎ নেত্রকোণা সদরের সাংবাদিক আব্দুর রহমান (নেত্রকোণা প্রতিনিধি- প্রতিদিনের সংবাদ) এর বড় ভাইয়ের মোবাইল ফোন নম্বরে রিং অজ্ঞাত (০১৭৬৫৯৪২৫৫৮৪ প্রতারক) নম্বর থেকে ভেজে উঠে। উনি ফোনটি বাসায় রেখে যাওয়ায় ফোন রিসিভ করেন পারিবারের লোকজন।
ফোন রিসিভ করতেই অপর দিক থেকে অস্থির-ব্যস্ত কণ্ঠে কেই একজন বলতেছে, এই ফোনটা কার। ফোন রিসিভকারী বলেন, এটা আমার বড় ভাইয়ের। এসময় অপর প্রান্তের লোকটা বলে উঠে, এই ফোনের লোক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ইমার্জেন্সিতে আছেন। জরুরি কিছু ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং অক্সিজেনের জন্য টাকা লাগবে। বিকাশে পাঠাতে হবে। আমাদের কাছে কিছু টাকা ছিল তা রোগীর জন্য খরচ করে ফেলেছি। তাড়াতাড়ি টাকা না পাঠালে রোগী মারা যাবে। তখনও ফোন রিসিভকারী বুঝতে পারেনি, তিনি একজন প্রতারকের সাথে কথা বলছেন।
মোবাইল ফোন রিসিভকারী ওই লোকটাকে বলেন, আপনারা একটা বিকাশ নম্বর দেন। সাথে সাথে ০১৯৭৩৮৩৪৫১৪ এই নম্বরটি দিয়ে বলেন, এটা বিকাশ নম্বর তাড়াতাড়ি ৩ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু ততক্ষণে আব্দুর রহমান হাসপাতালের নাম, ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে বললেন আলহেরা প্রাইভেট হাসপাতাল এর কথা বলতে থাকেন। হাসপাতালের নাম দুটো বলায় বিষয়টিতে সন্দেহ হলে আব্দুর রহমান বিকাশে টাকা পাঠানো বিরত থেকে ওই নম্বরে ফোন দিয়ে বলেন, আমি ময়মনসিংহ আসতেছি। তার আধ ঘন্টা পরে ওই নম্বরটিতে সাংবাদিক আব্দুর রহমান ফোন দিয়ে বলেন, আপনারা কোথায় আমি মংমনসিংহ এসেছি। নতুন কৌশল অবলম্ভন করে লোকটা ফোনে বলে উঠে সে রোগী নিয়ে ঢাকা চলে গেছে।
সন্ধ্যায় যখন ফোনে লোকটার সাথে আলাপ হয় তখন বলে লাশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন রোগী মারা গেছে। অথচ সাংবাদিক আব্দুর রহমান এর বড় ভাই আব্দুল হামিদ সুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকজনের সাথে ইফতার করেন। পরে বিষয়টি বুঝতে আর কারও বাকি নাই যে, বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিনব কৌশলে একজন প্রতারণা করছিল। এভাবে নতুন নতুন কৌশলে প্রতারণার চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রতারক চক্র।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই প্রতারক চক্রের লোকজন দেশের ভিতরে থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানুষের সাথে প্রতারণার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কেই ফাঁদে বলি হচ্ছে আবার কেউ জ্ঞান কাটিয়ে প্রতারণা চক্র হতে রেহাই পাচ্ছে। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ট্যাক করে তাদের আইনে আওতায় আনা যেতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশ সরকার পুলিশ-গোয়েন্দা সহ বিভিন্ন ফোর্স দক্ষ করে তোললেও তাদের কাছে খুব কম মানুষই সেবা পাচ্ছে। দিনে পর দিন বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনলাইনে ও মোবাইল ফোনে প্রতারণা চক্রকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।